Header Ads

Best Electronics

স্ট্রোকের লক্ষণ


স্ট্রোক বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত বয়স্ক নারীপুরুষকে শয্যাশায়ী করে ফেলে শুধু বয়স্ক নয়, কখনো কখনো অপেক্ষাকৃত কম বয়সী ব্যক্তিরাও স্ট্রোকে আক্রান্ত হন এবং কর্মক্ষমতা হারান
স্ট্রোকের লক্ষণ

মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটলে বা কখনো রক্তনালি ফেটে গিয়ে রক্ত জমাট বেঁধে গেলে মস্তিষ্কের কোনো অংশের কোষে যে স্থায়ী ক্ষতি হয়ে যায়, সেটাই স্ট্রোক।এ থেকে ব্রেন ড্যামেজ, প্যারালাইসিস এবং মৃত্যুও হতে পারে সুতরাং স্ট্রোক গুরুতর একটি স্বাস্থ্য সমস্যা উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তে চর্বির আধিক্য, ধূমপান ইত্যাদি স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। সময়মতো স্ট্রোকের লক্ষণগুলো বুঝতে পারলে দ্রুত চিকিৎসা নিলে ক্ষতিকর দিকগুলো অনেকটাই এড়ানো যায়। সুতরাং স্ট্রোকের প্রাথমিক এই ১৩টি লক্ষণ কোনোভাবেই অগ্রাহ্য করা যাবেন না

. মুখের অর্ধেক অসাড় হয়ে পড়া
আপনি যদি হঠাৎ করেই হাসার সময় মুখের অর্ধেক নাড়াতে না পারেন বা মুখের অর্ধেক পুরোপুরি অসাড় হয়ে পড়ে তাহলে তা স্ট্রোকের স্পষ্ট একটি লক্ষণ। এমনটা ঘটে যখন আপনার মুখের মাংসপেশিতে রক্ত সরবরাহকারী স্নায়ুগুলো অক্সিজেন সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়

. একটি বাহুতে দুর্বলতা
স্ট্রোকের আরেকটি স্পষ্ট লক্ষণ হলো কোনো একটি বাহুতে এমন দুর্বলতা বা অসাড়তা যে আপনি তা মাথার ওপর টেনে তুলতে পারছেন না

. কথা বলায় অস্পষ্টতা
আপনি যদি হঠাৎ করেই কথা বলার সময় অস্পষ্ট আওয়াজ করতে থাকেন তাহলে তা স্ট্রোকের লক্ষণ। এমনটা হচ্ছে আপনার মস্তিষ্কের কথা বলা এবং যোগাযোগের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণকারী অংশে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে। এমনটা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে গিয়ে ডাক্তার দেখান। আর নয়তো কথা বলার শক্তি হারাবেন চির তরে

. দেহের একপাশে দুর্বলতা বা প্যারালাইসিস
দেহের কিছু অংশ বা অর্ধেকটাজুড়ে দুর্বলতা বা প্যারালাইসিস এর মধ্য দিয়েও স্ট্রোকের লক্ষণ ফুটে ওঠে। এমন লক্ষণ দেখা দেওয়ার সাথে সাথেই হাসাতাল ডাক্তারে কাছে যেতে হবে। আর নয়তো স্থায়ীভাবেই দেহের অর্ধেকটা প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে পড়বে এবং অচল হয়ে যাবে

. পিন বা সুচ ফোটার অনুভূতি
দীর্ঘক্ষণ বসে বা শুয়ে থাকার কারণে বাহুতে এবং পায়ে যদি সুচ বা পিন ফোটার অনুভূতি হয় তাহলে তা স্ট্রোকের লক্ষণ নয়। কিন্তু আপনি যদি আগে কখনো সুচ বা পিন ফোটার অনুভূতি হয়নি এমন কোনো তৎপরতার মাঝখানে হঠাৎ করেই পিন বা সুচ ফোটার অনুভূতি পান তাহলে তা নিশ্চিতভাবেই স্ট্রোকের লক্ষণ

. ঝাপসা দৃষ্টি
স্ট্রোকের আরেকটি লক্ষণ হলো আপনার কোনো একটি চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসা। মস্তিষ্কের যে অংশ আপনার দৃষ্টি সম্বন্ধীয় কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে সে অংশে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যাওয়ার ফলে এমনটা ঘটতে পারে

. হঠাৎ ঝিমুনি
এটি স্ট্রোকের আরেকটি লক্ষণ। মস্তিষ্কের একটি অংশে রক্তসরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে এটা ঘটে

. হাঁটা-চলায় অস্বাভাবিকতা
আপনি যদি আগে ঘটেনি এমনভাবে হঠাৎ করেই হাঁটা-চলায় অক্ষম হয়ে পড়েন তাহলে বুঝতে হবে আপনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন

. তীব্র মাথাব্যথা
আপনি যদি আগের যে কোনো মাথা ব্যথার তুলনায় অনেক বেশি তীব্র মাথা ব্যথায় আক্রান্ত হন তাহলে বুঝতে হবে আপনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন। আর এই ব্যথা যে কোনো ব্যথার চেয়ে তীব্র হওয়ার কারণ এটি হলো মৃত্যুর আগে আপনার মস্তিষ্কের সাহাজ্য চেয়ে কান্না করার মতো

১০. স্মৃতি হারানো
মস্তিষ্কের যে অংশ স্মৃতি সংরক্ষণের কাজ করে সে অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে

১১. আচরণগত পরিবর্তন
মস্তিষ্কই যেহেতু আমাদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে সেহেতু স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে লোকের অস্বাভাবিক রাগ, উদ্বেগ এবং ভ্যাবাচেকা খাওযার মতো সমস্যা দেখা দেয়। এমনকি স্ট্রোক থেকে বেঁচে যাওয়ার পরও এমন সব সমস্যায় স্থায়ীভাবে আক্রান্ত হতে পারেন

১২. লালা গেলায় সমস্যা
আপনি হয়তো বুঝতে পারেন না।  কিন্তু আপনি প্রতি ১৫-৩০ সেকেন্ড পরপর আপনার মুখের লালা গিলে ফেলেন। প্রকৃতপক্ষে একজন মানুষ প্রতি ২৪ ঘন্টায় ৬০০-৮০০ বার লালা গিলে ফেলেন। আর খাবারের সময় সচেতনভাবে গেলা তো আছেই। সুতরাং হঠাৎ করেই যদি আপনি লালা আর গিলতে না পারেন এবং তা মুখ বেয়ে পড়তে থাকে তাহলে বুঝতে হবে আপনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন

১৩. মাংসপেশিতে খিল ধরা
আপনার মাংসপেশির স্নায়ুগুলোর রক্ত সরবরাহ যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে আপনার দেহের এক বা একাধিক জায়গায় মাংসপেশি শক্ত হয়ে আসবে। দেহের যে কোনো অর্ধেক অংশেই সাধারণত এমনটা ঘটে

স্ট্রোক প্রতিরোধ করতে মধ্যবয়স থেকেই সচেতনতা দরকার। নিয়মিত নিজের রক্তচাপ মাপুন। রক্তচাপ বেশি থাকলে তা নিয়ন্ত্রণ করুন। রক্তের শর্করা চর্বি নিয়ন্ত্রণে রাখুন। ধূমপান বর্জন করুন। বেশি করে তাজা শাকসবজি ফলমূল খান। ওজন ঠিক রাখুন। খাবার লবণ কমিয়ে দিন। স্ট্রোক আপনার কর্মমুখর জীবনকে হঠাৎ করেই স্থবির করে দিতে পারে। তাই এখনই সচেতন হোন

No comments

Theme images by 5ugarless. Powered by Blogger.